তুমি আসবে বলে ।। কামরান চৌধুরী

রামচন্দ্রের ডাকটি শুনে আশ্বিনে মায়ের অকাল বোধন

স্বর্গদেব গণের একত্র শক্তি নিয়ে মর্তে করো অসুর নিধন।

বছর বছর মর্তে এসে, সব হৃদয়ে জাগাও শক্তি তুমি

আবার ফিরে যাও কৈলাসে, ব্রহ্মস্বরূপিণী.. তোমার চরণ চুমি।

তুমি আসবে বলেই দেখো- প্রকৃতি সেজেছে আজ কতো

শুভ্র কাশে ভরে গেছে মাঠ, ভোরের শিশিরে স্নাত ঘাস।

নীলাকাশে মেঘের ভেলায় টুকরো টুকরো সুখ বাস

শিউলি বেলিতে সুরভিত আহা আনন্দিত চারপাশ।

শব্দ ঘন্টারা মিলিয়ে যায়, মন মাঝে নিস্তব্ধ কোঠায়

তোমার মুখে চেয়ে চেয়েই…. লুপ্ত সুগভীর মগ্নতায়।

তুমি আসবে বলে সারাটা বছর অপেক্ষা করে থাকা

তুমি ছাড়া জীবন যে বড়, অসহায় লাগে ফাঁকা ফাঁকা।

তুমি আসবে বলে উন্মুখ বৃদ্ধ-শিশু-যুবক-ঘরণী

কেনাবেচায় ব্যস্ত দোকানী, সুর-ছন্দে আনন্দ ধরণী।

দুর্গা আছে আমারই ঘরে, দুর্গা আছে তোমারও ঘরে

দুর্গা আছে পথে-ঘাটে-জলে, আকাশে বাতাসে সেবাশ্রমে

দুর্গা দেখো আছে কর্মস্থলে, বিদ্যাপিঠ-সভা মন্দির-মঠে।

চিনেও চিনিনা, বুঝি নাতো, মা, তব তেজস্বিতা শক্তিমত্তা।

মা তুমি অন্তরযামিনী, দুর্গতিনাশিনী

যে ডাকে তোমায়, তুমি তারই সহায়

না ডাকে যে, তুমি তারও সহায়;

তবে বলতে পারো…… কেন ডাকবো তোমায়?

আমার ঘরের দুর্গা সেতো দিন রাত খাটে

তবু তার ভাগ্যে কভু, সুখ-শান্তি নাই জোটে।

পাশের বাড়ির দুর্গা সেতো দিন রাত ছোটে

দু’বেলা অন্নের খোঁজে বিষন্নতা দেহ টুটে।

পথে ঘাটে থাকা দুর্গা ক্ষুধার জ্বালায় মরে

অসুর শকুনে তাকে আঁছড়ে খাবলে ধরে।

জগৎ সংসারের অসুর নিধন…. করবে বলো কে?

আশীর্বাদী দৃষ্টি দিয়ে, মুছে দাও মনের পশুকে।

ঘরে বাইরে দুর্গার মুখে হাসি ফুটবে কবে?

তোমার পুজা সবার তরে সত্যি হবে তবে!

দুর্বল মন তোমার পানে নিত্য ছুটে চলে

আশা-নিরাশায় বাঁধা বুক অতলান্ত বলে।

নিরাশ করো না কভু তুমি কর্মের বাঁধনে বেঁধে রাখো

ভন্ড অসৎ দুষ্ট পাপীর, বিনাশে একটু ফিরে দেখো।।

শ্যামলী, ঢাকা।। তারিখ-২২.০৯.২০২৩

7
0

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top