সমাহিত চিঠি : কামরান চৌধুরী

‘মনের গহীন সিন্দুকে যে কথা স্মৃতি চাপা আছে সেটা ইচ্ছে করলেই বের করা যায়, কিন্তু এই ভিটের তলায় কণার চিঠিগুলো যে চাপা পড়ে গেছে সেটা ইচ্ছে করলেই বের করতে পারি না।’ ভাবতে ভাবতে সমীর হারিয়ে গেল তার শৈশব জীবনে। পঁচিশ বছর পর সমীর তার বাড়ির আঙিনায় বসে বসে ভাবতে থাকে। হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলো কত যে মধুর, কত যে আনন্দ বেদনার মিশেল আছে তাতে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব হয় না কোনো ভাবেই।


বহু বহুদিন পর আজ শীতের কুয়াশা ভরা ভোরে, বাড়ির সামনের বারান্দায় চেয়ারে বসে চা পান করছে সমীর। সামনে কুয়াশায় ভিজে যাওয়া রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়া সাইকেলের চাকা, যাত্রীর পায়ের দাগ ফুটে উঠেছে। মাঝে মধ্যে মটর সাইকেল, নসিমনও যাচ্ছে শব্দ করে। তারও দাগ ফুঁটেছে পিচঢালা রাস্তার উপর। ভোরের মিঠা রোদ গাছের পাতার ফাঁক গলে মাটি স্পর্শ করছে রাতভর শিশির পাতায় জমে টুপটুপ গড়িয়ে পড়ছে। সমীরের মনের মাঝে ভোরের সেই সূর্য উঁকি বেশ লাগছে। আ হা! কতদিন ভোরে ওঠা হয়নি। ব্যস্ততায় ব্যস্ততায় কেটে গেছে দিন। দায়িত্বপালন, সংসারের বৃত্তে ঘুরছে যেন জীবন চাকা অবিরত।
চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে সে দেখে, দুইটি ছেলে ও একটি মেয়ে ড্রেস পড়ে পাশের স্কুলের পথে চলেছে। তাদের পেছন পেছন হাঁটছে সমীর এর মন। হাঁটতে হাঁটতে মন চলে যায় ২৫ বছর আগে কণার কাছে।


মনে পড়ে তার স্কুল জীবনের কথা। সমীর তখন খুলনা জেলার মংলা থানার একটি স্কুলে পড়তো। স্কুলটিতে ছেলে-মেয়ে একসাথে পড়তো। স্কুলগৃহের সামনে ছিল একটি বড় মাঠ। পাঁচিল দিয়ে ঘেরা ছিল স্কুলের চারধার। সমীর যখন নবম শ্রেণিতে পড়ে তখন তার সহপাঠীদের মধ্যে কণা নামে একটি মেয়ে ছিল যাকে তার খুব পছন্দ ছিল। কণাও তাকে পছন্দ করতো। যার সাথে ক্লাসে, ক্লাসের বাইরে চোখাচোখি হতো। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে চোখের ইশারায় কতো কথা হতো দুজনের। দু‘জনেই লাজুক, তবু কেমন করে যেন মনে মন লেগে যায় দ‘ুজনার। চলতে পথে দেখা হতো, চোখে চোখে কথা হতো। লজ্জা রাঙা মুখটা গোলাপী আভায় ভরে যেতো। এমনি করেই দিন যায়, রাত যায়, মাস যায়। দুজনের বুকের ভেতর কাছাকাছি কথা বলার আকাঙ্খা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। তবুও লজ্জা ভয় মনকে কোনঠাসা করে রাখে। বাধভাঙ্গা জোয়ার এসে কিশোর বয়সের আবেগের প্রবল টানে লজ্জা সংকোচ ভয় জয় করে সমীর চিঠি লিখল কণাকে।


প্রিয়া আমার,
তোমাকে ভালোলাগে, তোমার জন্য প্রাণের মাঝে কেমন কেমন করে।
ভালোবাসি তোমায়, তোমার আঁখি যুগল, মুখের হাসি সবই মধুর লাগে।
ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি।
ইতি
তোমার আমি


চিরকুটটি বইয়ের মাঝে ভাঁজ করে চালান করে দিল সে। কণার মনেও এতোদিন ধরে যে প্রণয় আসি আসি করছিল, আজ যেন সে বিশ্ব জয়ের হাসি স্পর্শ করলো। সে এক নিঃশ্বাসে কয়েকবার চিঠিটি পড়ে নিল। বেশি কিছু লেখা নয়, তবুও মনে হয় যেন এক মহাকাব্য। কণা কখনো বসে, কখনো শুয়ে, সেই চিঠি পড়তে থাকে। লুকিয়ে লুকিয়ে ঘরের দরজা লাগিয়ে লোক চক্ষুর অন্তরালে পড়ে। বেণি দুলিয়ে দুলিয়ে উচ্ছ¡ল কিশোরী আরো উচ্ছ¡ল প্রাঞ্জল হয়ে ওঠে।
জীবনে এই প্রথম চিঠি। চিঠিটি দেয়ার পর সমীর এর বুকের ভেতর একটা ভয়, একটা উৎকন্ঠা কাজ করছিল। কণা কী ভাবে নিবে বিষয়টি। সে যদি কাউকে বলে দেয়। তখন কী হবে, ভেবে পাচ্ছে না। অস্থির ভাবনা মনের মাঝে উঁকি দিচ্ছে প্রতিক্ষণে।


রাতেও তার ঘুম আসছিল না। ভোর রাতে হঠাৎ কখন তন্দ্রা এলো। স্বপ্ন দেখল কুয়াশা ঢাকা, ছায়াঘেরা মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দুজন। পাশাপাশি নিরব মৌনতায় চার পা এগিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে দুটি হাত লেগে যাচ্ছে হাতে। পথপাশে তৃণলতা, বনফুল, বেড়ে ওঠা ঢোলকলমি সব তাকিয়ে থাকে তাদের দিকে। স্বাগত জানায় নতুন প্রেমিক-প্রেমিকাকে, বাতাসে দুলে দুলে গাছপালা লতাপাতা অভিবাদন জানায়। শিশির ভেজা ঘাসগুলো যেন সুগন্ধী আতর মাখিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে। প্রকৃতির নিরবতা ভেঙ্গে পাখি ডেকে ওঠে।


পরদিন ভয়ে ভয়ে স্কুলে গেলো। দেখল সবই স্বাভাবিক। কণার চোখে চোখ পড়তেই সে মুচকি হেসে দিলো। সেই হাসিতে মিশে ছিল সম্মতি, প্রণয়ের গভীর চুম্বন। সমীর যেন তখন হাতে আকাশের চাঁদ পেলো। তার মনটাও খুশির জোয়ারে ভরে গেল। মনের বাগানে ফুল ফুটলো বাহারি সুগন্ধী ফুল। এমনি করেই শুরু। তারপর, একদিন পরপর চিঠি। চিঠি পাবার পর সে কী প্রতীক্ষা। সবার অজান্তে সেই চিঠি আবার কণার কাছে পৌঁছানো যায়, সেই ভাবনা। কয়েকদিন পরপর নতুন ফন্দি আটতে হতো। নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে সবার চোখ আড়াল করে চিঠি দেয়া নেয়া করতো। কখনো বইয়ের ভাঁজে, কখনো খাতার মাঝে, পাচিলের ফাঁকে, ইটের স্তুপে, ভাঁজ করে ফেলে রাখা এভাবেই চলতো।


স্কুল মাঠের মাঝে সিমেন্টের একটা বড় পাইপ ছিল। সেই পাইপের মাঝে চিঠি রেখে মনের কথা আদান প্রদানও হতো। সমীর একটি চিঠি সেখানে রেখে মাটি দিয়ে ঢেকে রাখে, আর কণা এসে মাটি সরিয়ে সেই চিঠি বাসায় নিয়ে যায়। রাতে চিঠিটি কয়েকবার করে পড়ে। তখনকার আমলে মোবাইল আসেনি এদেশে। অভিভাবকের চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে চিঠি পড়তে পড়তে মনের ভেতর এক অভূত ভালোলাগা তৈরি হতো। আবার সেই চিঠির উত্তর দেয়ার জন্য কত কিছু ভেবে ভেবে মনের কথা সাজিয়ে লিখতে হতো। সকালে স্কুলে যেয়ে আবার নির্দিষ্ট স্থানে চিঠিটি রাখতো। কণা চিঠি তুলে নিতো আর উত্তর লিখে রাখতো, সেই উত্তর দেয়া নতুন চিঠি সমীর বাসায় নিয়ে আসতো সবার অগোচরে, বাসায় এসে ঘরের দরজা লাগিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তো।


চিঠি লেখা হতো সাদা কাগজের উপর ফাউন্টেন পেন দিয়ে। কখনো রেডলিফ শিস দিয়ে লিখে যেতো মনের কথা, আল্পনা আঁকতো পেন্সিলে। সাথে নিজের বাগানের গোলাপ ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে বইয়ের মাঝে রেখে শুকনো করে চিঠির সাথে দিত। শুকনো গোলাপের পাপড়িতে লেগে থাকা সুগন্ধ আর লেখনির সৌরভ সমিরকে আচ্ছন্ন করে রাখতো। চিঠি পাবার পর কণাকে কি উত্তর দিবে, সেটা ভাবতে থাকে। বন্ধুদের সাথে আস্তে আস্তে করে তার বাঁধন কাটতে থাকে। মনের কথা দু-তিনজন বন্ধু ছাড়া আর কাউকে বলতে পারে না। সমির তাঁর বাড়িতে যাবার পথে বকুল গাছের নিচ থেকে একমুঠো বকুল ফুল তুলে আনে। সেই বকুল ফুল শুকিয়ে সেটা চিঠির মাঝে চালান করে দেয়। কণা সেটা নিয়ে বাড়িতে যায়। মনের মাঝে ছটফট করতে থাকে, সবার অগোচরে কখন চিঠিটি খুলবে এবং এক নিঃশ্বাসে চিঠিটি শেষ করবে। সন্ধ্যায় হারিকেন জ্বালিয়ে পড়া শেষ করে, ভাই-বোনদের সাথে পড়তে বসে এক টেবিলে। দু‘ঘন্টা পর খাবার খেতে বসে পরিবারের সবার সাথে। খাবার শেষ করে সবার ঘুমতে যাবার পালা। মা এসে বিছানা করে দেয়, ঘরের দরজার খিল লাগায়। এরপর ছোট ভাই ও বোনকে নিয়ে এক বিছানায় শুতে আসে। হারিকেনের আলো কমিয়ে দিয়ে ঘরের কোণে হারিকেনটা রেখে মশারির মধ্যে সেও ঢুকে পড়ে। কিন্তু কোনভাবেই কণার ঘুম আসে না। ছোট ভাই ও বোন ঘুমিয়ে গেলে সে আস্তে আস্তে উঠে আসে। বইয়ের মলাটের মধ্যে রাখা চিঠিটা বের করে। চিঠির মাঝে থাকা বকুল ফুলের মালাটি নাকের কাছে নেয়, গন্ধ শুকে দেখে, চোখ বন্ধ করে আবার গন্ধ নেয়। চিঠিটা কয়েকবার পড়ে, হারিকেনের আলো কিছুটা কমিয়ে তারপর চিঠিটি ভাজ করে বইয়ের মলাটে লুকিয়ে রাখে। এরপর মশারির মধ্যে ঢুকে পড়ে। রাতে বুকের উপর রাখে, শুকনো বকুলের সুগন্ধে তার মন কোথায় হারিয়ে যায় কখন ঘুমিয়ে যায় সেটা সে বুঝতে পারে না।


পরদিন স্কুলে যায় চিঠি লেখা হয়নি, সমীর চিঠির জন্য অপেক্ষা করে। কণা চোখের ইশারায় জানায় আগামী দিন চিঠির উত্তর দিবে। এভাবে দুজন দুজনকে চেনে জানে। তাদের মাঝে পবিত্র একটি ভালোবাসা জন্ম নেয়। সমীররা থাকতো টিনের বাড়িতে। নিচে ছিল মাটির ভিটে। মাটির ভিত পাশে টিনের বেড়া, ছাদও ছিল টিনের। অন্যের চোখের আড়াল করতে সমীর তার ঘরে কাঠের চৌকির নিচে মেঝেতে গর্ত করে আধা হাত। সেই গর্তের মাঝে মাটির হাড়ির মধ্যে পলিথিনে পেচানো চিঠির পোটলা মাটি চাঁপা দিয়ে সমান করে রাখে। একটু পানি দিয়ে লেপে দেয়। যাতে কেউ বুঝতে না পারে।


দিন যায় রাত যায়, অনেক অনেক চিঠি জমা হয়। সমীর সব চিঠি গুছিয়ে রাখে। মাঝে মাঝে অবসরে ঘরের দরজা বন্ধ করে চিঠিগুলো মেলে ধরে। চিঠিগুলো একে একে পড়তে থাকে। পড়া শেষ করে সেগুলো আবার গুছিয়ে রাখে পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে। যখন চিঠির সংখ্যা বেশি হয়ে যায় তখন সমির দশটা করে চিঠি ঘরের মেঝেতে লুকিয়ে রাখে। বৃষ্টির দিনে যখন ঘরের বাইরে বের হওয়া যায় না তখন একটু ঘন ঘন চিঠি বের করে পড়তে থাকে। যখন তার মন খারাপ থাকে, কণার সাথে দেখা কম হয়, তখনই চিঠির আশ্রয় নেয়।


গরমের লম্বা ছুটিতে সমীর বাড়ি যেতো। ছুটির সময় পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে চিঠি আদান-প্রদান করতো। একদিন ডাক পিওন সাইকেল চড়ে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে, সাইকেলের বেল বাজিয়ে চলেছে। চিঠি চিঠি বলে ডাক দিয়ে যাচ্ছে। বাবা বের হয়ে গেল কার চিঠি, পিওন জানালো সমীরের চিঠি। চিঠির খামের উপর লেখা কণা, মংলা। বাবা-কাকা সবাই উৎসাহী হয়ে খুলতে উদ্যত হলো চিঠি খুলে দেখার জন্য। কী লেখা আছে চিঠিতে। সমীর তখন দূরে ছিল, চিঠির কথা কানে যেতেই ছুটে চলে এলো। এসে দেখে বাবা চিঠির কোণা ছিড়ে ফেলেছে, চিঠি বের করবে করবে ভাব। সমীর ছো মেরে নিয়ে বললো অন্যের চিঠি পড়তো হয় না, এটা তোমরা জানো না ? তার চোখ-মুখ লাল হয়ে গেল। লজ্জায়, আর ভয়ে তার মুখ লাল হয়ে ছিল। তার মনে হতে লাগলো যদি বাবা-কাকারা চিঠিটা পড়ে ফেলতো, তবে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারতো না।


কণা ও সমীর ক্রমান্বয়ে অস্টম, নবম শ্রেণি পার হয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিল। সম্পর্কও গভীর হলো। উভয়ে পাশ করলো। এরপর সমীর মংলা থেকে চলে এলো ঢাকাতে। কণা থেকে গেলো গ্রামের বাড়িতে। তখনও চিঠি চালাচালি চলছিল দু‘জনের। দু‘মাস পর সমীর ঢাকা থেকে বাড়ি যেয়ে দেখে তাদের ঘরটি পাকা করা হয়েছে। বুকের ভেতর কেমন করে উঠলো। মাত্র দুইমাসে কতো পরিবর্তন হয়ে গেছে। এমন কষ্ট সে আগে কখনো পায়নি। কাউকে বলতেও পারছে না সেই কষ্টের কথাগুলো দেখলো।


বাড়ির ঘরের মেঝের পাশে গর্ত করে ভিত তোলা হয়েছে। সেখানে ইট-সিমেন্ট-বালির মিশেলে ভিত উচু করা হয়েছে। ইটের গাঁথুনি তৈরি হয়েছে চারপাশে। গ্রামের বাড়িগুলো যেভাবে করা হয়। ঘরে ঢুকেই সে স্তব্ধ হয়ে গেল। দেখলো মেঝেতেও শান বাঁধানো হয়েছে। সেখানে যে মাটি ছিল, তার উপর ইট বিছিয়ে শান বাঁধানো হয়েছে। এটা দেখেই সমীর এর মনে হলো বুকের উপর হিমালয় পাহাড় চাপা দেয়া হয়েছে। এই মাটির নিচে তার কতো দিনের স্বপ্ন, স্মৃতি, ভালোবাসা চাপা পড়ে গেল। সমীর ছাড়া এটা আর কেউ জানে না। কতো কান্না, কতো বড় ব্যথা সেদিন পেয়েছিল সমীর আজ আবার তা মনে পড়ে গেল।


মনে প্রশ্ন জাগে, আজো কী সেই চিঠিগুলো তেমনই পলিথিনে প্যাচানো রয়েছে অক্ষত? আজো কী অবিকৃত আছে সেটা? কণাও হারিয়ে গেছে জীবন থেকে, শুনেছি বিয়ে হয়েছে তার অন্যখানে। অন্য শহরে আবাস গড়েছে। হয়তো ছেলেমেয়ে নিয়ে আনন্দে সংসারও করছে। তার সাথে যোগাযোগ নেই, নেই চিঠি চালাচালি; ফোনের বা ফেসবুকেও যোগাযোগ। কৈশরের সেই দিনগুলোর শত চিঠির সিন্দুক আজো মাটি চাপা রয়েছে এই ঘরের তলায়। শত শত দিনের সুখ-দুঃখ চাঁপা পড়ে গেছে, যেমন করে চাপা আছে কণার স্মৃতি এই অন্তরের কৃষ্ণ গহŸরে। আর কখনো কী মেঝে খুড়ে বের হবে সেই চিঠিগুলো ? আমি চলে গেলে কেই বা খোঁজ নিবে তার। প্রথম প্রেমের প্রথম অনুভূতিরা এভাবেই মাটি চাপা পড়ে থাকবে চিরকাল ? কাউকে জানিয়ে রাখা দরকার এই বাড়ি সংস্কার করা হলে চিঠিগুলো খুঁজে দেখতে বলবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top