সদ্য কৈশর পেরোনো যৌবনের ঊষাকালে হলো দেখা
ক্রমে ক্রমে হলে তুমি এই হৃদয়ের চির বন্ধু সখা।
পলকহীন দৃষ্টি মেলেছিলে মৌমাতানো গুঞ্জন তুলে
চলতি পথে ঠিকানা ফেলে ছুটলে মরীচিকায় ভুলে।
দিনের আলোয় বিবর্ণ নক্ষত্র মেঘে মেঘে ঢাকা ছায়া
ঘূর্ণিবায়ু উন্মুক্ত করেছে চেনা স্মৃতির সেই সে কায়া।
বেলা অবেলায়, আশা নিরাশায়, পায়নি খুঁজে তোমায়
গেছো চলে, সাগর পেড়িয়ে বহুদূর দূর সীমানায়।
ত্রিশ বছর পর, হঠাৎ হৃদবৃন্তে বিদ্যুৎ চমক
বার্তাগৃহে ফেসবুকে শুরু কথামালা, আবেগ ঝলক।
দেখি স্মৃতির এ্যালবামে ধূলো জমে মলিন ছবিপৃষ্ঠা
মুছেমুছে ভাললাগা মুহূর্তগুলো ছোঁয়ার সেকি চেষ্টা।
সেই রহস্যময় চাহনি, সেই হাসি আজো অমলিন
মনরাজ্যের দ্বীপমালায় আবাস গড়ে, কষ্ট বিলিন।
জ্যোতিষ্ক মণ্ডল থেকে, নক্ষত্র দিশা দৃষ্টির অন্তরালে
নিজস্ব বলয় ফেলে দূর থেকে দূরে সরে গিয়েছিলে।
বয়স স্রোতে জীবন বাঁকে, কত চিন্তা করে আজ ভীড়
সময়ের ঘাত প্রতিঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হৃদয় নীড়।
চঞ্চল অচঞ্চল ইচ্ছেগুলো সাঁতার কেটে কেটে ক্লান্ত
দিনশেষে দিনমনি বিষন্নমুখে পশ্চিমে ঢলে শ্রান্ত।
দিগন্তের মলিন আভায় স্মৃতিরা চলেছে উদভ্রান্ত
হঠাৎ সেখানে উদাসী হাওয়ায় স্মৃতিরা দিকভ্রান্ত্।
বললে, দেথো, পৃথিবীটা কত ছোট, দেখা হলো আবার
এক শহরে বাস, তবু হয়নি দেখা, তোমার আমার।
শহরটা বড্ড বড়! হয়নি দেখা কোথাও, এতোদিনে
ত্রিশ বছর! বড্ড বেশি দেরী হলো, তাই না, বন্ধুহীনে।
সে কলেজ আঙিনা, লাইব্রেরি, নির্জন পথে পায়ে পায়ে
গল্প কথা, নিশ্চুপ বসে থাকা, চোখ মাঝে ডুবসাঁতার।
বেলা অবেলায় সুতোয় টান, চরকির মত পেঁচানো
তারপর, যুগ যুগ কেটে যাওয়া অন্ধকারে ঘুমানো।
জীবন যুদ্ধ, জয় পরাজয়ের টুকরো টুকরো স্মৃতি
ভালোবাসা ভালোলাগা বেলুন চুপসে যায় সব গীতি।
দেহের ভাঁজে ভাঁজে অপরূপ চিহ্ন এঁকেছো মগ্নতার
ত্রিশ বছর পর, আবারো সে মিলন মেলা, সখ্যতার।
বাকিটা জীবন যাক না কেটে বকুলের সুবাস মেখে
সুখের অনুভূতি থাকুক জমে তোমার আমার বুকে।।
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮।। শ্যামলী, ঢাকা। (বিবর্ণ গোধূলিতে প্রেম কাব্যগ্রন্থ থেকে সংগৃহিত)