প্রিয়তমা : কামরান চৌধুরী

প্রথম দেখার অনুভব যেন আজো সুদূর অতীত পানে টানে
লুপ্তপ্রায় হরপ্পা মহেঞ্জোদারো মায়া সভ্যতার জীর্ণ কংকাল মনে।
পাওয়া না পাওয়া বাসনা অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাস আজো ইথারে ভাসে
ভোরের শিশিরে কান্নার পরশ মেখে কষ্টনদী স্মৃতি ভেলায় আসে।

বদলে যাওয়া পৃথিরীর স্বাদ নিতে শুধুই আঁকড়ে ধরা প্রাণপণে
ছায়া ঢাকা পথপাশে প্রজাপতি ও ফড়িং হাসে, ভাসে, ঘাসে।
অদৃশ্য যুগলবন্দী মিলন আকাঙ্খা পরিভ্রমণ করে সতত
প্রিয়তমা ঘূর্ণায়মান জীবন তোমাতে কেন্দ্রীভূত তবুও অতৃপ্ত।

ঐ ঠোটের মাঝে জমে থাকা মৃত সঞ্জীবনী সুধা চাই শুষে নিতে
প্রিয়তমা বাঁধা দিও না হারিয়ে যেতে দাও অনিন্দ্য সুখ সাগরে।
প্রিয়তমা তোমার বিশাল বক্ষ মাঝে অনন্ত শান্তির পোতাশ্রয়
দিবে কি আমায় উষ্ণ আলিঙ্গনে ঐ বুকের ঘরেতে নিশ্চিত ঠাঁই।

যে হাসির রেখা সকল বুকেতে প্রশান্তির সুবাস ছড়িয়ে দেয়
সেই হাসি বসন্তের প্রজাপতি হয়ে দেহে আবির বুলিয়ে যায়।
বছরের পর বছর হেঁটেছি উদাসীন ক্লান্ত অবসন্ন দেহে
চোরাবালিতে ডুবে যেতে যেতে তোমার স্পর্শ যাদুতে উঠেছি জেগে।

প্রিয়তমা তোমার অতল দৃষ্টিতে যে অফুরন্ত প্রাণশক্তি গতি
ডুবন্ততরী চুম্বক আকর্ষণে ঝটকায় কুলে ভিড়ে মানে নতি।
তৃষ্ণার্ত হৃদয় পায় যে সন্ধান দেশ মৃত্তিকা ও মানুষের গন্ধ
ফসলে ভরা মাঠ, কৃষাণ মুখে হাসি, ঘরে ঘরে আনন্দ সুগন্ধ।

কত যে নিস্তব্ধ রাত পার হয় মধু স্বপ্নের নকশীকাঁথা বুনে
প্রিয়তমা সেই আকুল বাসনার রুদ্ধ গোঙানি পারো কি শুনতে।
অন্ধকারে মিটিমিটি তারা মৃদু হাতছানি দেয় সুপ্ত ভালোবাসা
আশায় আশায় শুধুই কি পথ চাওয়া, দুরন্ত যৌবন নিরাশা……..

জনমে জনমে বন্ধন যে জাগরুক পাখির গানের সুরে সুরে
জীবনে মরণে বুকের গহীনে সুখ দ্বীপ জেগে ওঠে বারেবারে।।

৫ জুন, ২০১৮।। শ্যামলী, ঢাকা। বিবর্ণ গোধূলিতে প্রেম কাব্যগ্রন্থ থেকে নেয়া

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top